সাত দিনে এক সপ্তাহ। এর মধ্যে একটি দিন হলো শুক্রবার। এই দিনটি হলো জুমার দিন। জুমা বারকে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) সাপ্তাহিক ঈদের দিন বলেছেন যা ইবনে মাজাহের ১০৯৮ নম্বর হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে। আমাদের দেশসহ বিভিন্ন মুসলিম দেশে এই দিনটিতে সবকিছু বন্ধ বা ছুটি থাকে। এটি আমরা মুসলমানদের জন্য সপ্তাহের বিশেষ একটি দিন, যেই দিনের ইবাদত অন্যান্য দিন অপেক্ষা উত্তম। মহান আল্লাহ তায়ালা এই দিনের ইবাদতের গুরুত্ব বোঝানোর জন্য আমাদের মহাগ্রন্থ পবিত্র আল-কুরআনে এ সম্পর্কিত বিভিন্ন আয়াত নাজিল করেছেন। তাছাড়া এই দিনের নামেই তিনি একটি আলাদা সূরা নাজিল করেছেন। জুমার দিনের ফজিলত ঈদ-উল ফিতর বা ঈদ-উল আযহা অপেক্ষা কিছু কম নয়। কেননা ইসলামিক ইতিহাসে যে সকল মহা ঘটণাবলী সম্পন্ন হয়েছে তার অধিকাংশই ঘটেছিলো এই বারটিতে। মহান আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনের 'সূরা জুমআ' এর ৯ নম্বর আয়াতে উল্লেখ করেছেনঃ

মহানবী (সাঃ) এর হাদীস অনুসারে মহান আল্লাহ তায়ালা শুক্রবারে পৃথিবীর প্রথম মানব ও নবি হযরত আদম (আ) কে সৃষ্টি করেছেন। আর শুক্রবারেই তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছিলো এবং এই বারটিতেই তাকে জান্নাত থেকে বের করে পৃথিবীতে পাঠিয়েছিলো। আর এই শুক্রবারেই ধ্বংস হবে আমাদের পৃথিবী।

জুমার দিনে অনেকগুলো আমল রয়েছে যার মাধ্যমে প্রচুর পরিমাণে সাওয়াবের অধিকারী হওয়া যায়, তবে তার মধ্যে সবচেয়ে ফজিলতপূর্ণ হলো তিনটি।

যথাঃ 

এখন আমরা আলাদা আলাদাভাবে অই তিনটি বিষয় সম্পর্কে জানবোঃ

সূরা আল-কাহফ কুরআন মাজিদের ১৮ নম্বর সূরা। এই সূরাটি একটি ফজিলতপূর্ণ সূরা, বিশেষ করে জুমার দিনের জন্য। এই সূরার সম্পূর্ণ পড়াটা উত্তম, কিন্তু কোন ব্যক্তি যদি সম্পূর্ণটি পড়তে অপারগ থাকে তবে নূন্যতম উক্ত সূরাটির প্রথম ও শেষ ১০ আয়াত তিলাওয়াত করতে পারবে। এক্ষেত্রে ঠিক একই সাওয়াব ও তাদের ক্ষেত্রে একই হাদিস প্রযোজ্য। নিম্নে এই সম্পর্কিত কিছু হাদিস উল্লেখ করা হলো-

মহানবী (সাঃ) এর উপর দূরূদ পাঠ করা জুমার দিনের আরো একটি বিশাল সাওয়াবপূর্ণ কাজ। যে ব্যক্তি নিম্নোক্ত দোয়া ৮০ বার পাঠ করবে তার ৮০ বছরের গুনাহ মাফ হবে ও তার আমলনামায় ৮০ বছর ইবাদতের সাওয়াব লিখা হবে। (সুবহানআল্লাহ, সুবহানআল্লাহ, সুবহানআল্লাহ)। 

 ‘আল্লাহুম্মা সাল্লি আ’লা মুহাম্মাদিনিন নাবিয়্যিল উম্মিয়্যি ওয়া আ’লা আলিহি ওয়া সাল্লিম তাসলিমা।’

আসরের সালাতের পর থেকে সূর্যাস্ত বা মাগরিবের সালাত পর্যন্ত যতটুকু সমইয় থাকে ততটুকু সময় মহান আল্লাহ তায়ার ইবাদতে ব্যায় করা। এতে প্রচুর পরিমাণ সাওয়াবের অধিকারী হওয়া যাবে। আমরা সবসময় মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ইবাদত করবো। আমাদের ইবাদত হবে শুধুমাত্র একজনের জন্য। আর তিনি হচ্ছেন আল্লাহ তায়ালা।

জমার দিনে আরো কিছু আমল রয়েছে। খুব সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে ফজরের সালাত পড়ে কুরআন পাঠ করা। নখ কাটা থেকে শুরু করে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হওয়া। গোসল করে তাড়াতাড়ি জুমার নামাজে যাওয়া। ইমাম সাহেবের কাছাকাছি বসা। তার বয়ান শোনা ও খোৎবা শোনা। সুন্নত নামাজগুলো পড়া। সর্বোপরি ইবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে মহান আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভ করা।