কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাক হোল রহস্য।
কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাক হোল রহস্য।
যারা বিজ্ঞানের ছাত্র বা বিজ্ঞান অনুরাগী তাদের সকলেই হয়তো কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাক হোল শব্দটির সাথে কমবেশি পরিচিত। কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাক হোল রহস্য একটি বিষ্ময়কর রহস্য। আজকে আমরা কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাক হোল রহস্য সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো ইনশাআল্লাহ।
কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাক হোল রহস্য। |
কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাক হোল মূলত কী?
আমাদের কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাক হোল সম্পর্কে জানতে হলে প্রথমে জানতে হবে কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাক হোল মূলত কী? কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাক হোল হলো এমন কিছু মৃত তারকা বা নক্ষত্র যা অত্যন্ত শক্তিশালী মহাকর্ষ বল (মহাবিশ্বের প্রত্যেকটি বস্তুকণা একে অপরকে আকর্ষণ করে। আর তাকে মহাকর্ষ বল বলে।) সৃষ্টি করতে পারে। আর এই শক্তিশালী মহাকর্ষ বল দ্বারা সেই ব্ল্যাক হোলটি তার কাছে আসা সকল বস্তুকে একেবারে টেনে নিয়ে যেতে পারে। আমাদের মনে প্রশ্ন আসতে পারে, তবে কী কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাক হোল কোন গ্রহ, ধুমকেতু বা স্পেসক্রাফটকেও নিজের ভেতরে ভরে ফেলতে পারে? অবাক হওয়ার বিষয় ব্ল্যাক হোল শুধু গ্রহ, ধুমকেতু বা স্পেসক্রাফট না বরং আলোকরশ্নিকেও নিজের ভেতর ভরে ফেলতে বা গিলে ফেলতে সক্ষম। একে অনেকসময় মহাকাশের দানব বলা হয়। পদার্থবিজ্ঞানী জন হুইলার এই অদ্ভুদ জিনিসটির নামকরণ করেছিলেন 'ব্ল্যাক হোল' যাকে বাংলায় বলা হয় কৃষ্ণগহ্বর।
কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাক হোল কীভাবে সৃষ্টি হয়?
কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাক হোল সৃষ্টির রহস্য অনেকটা রূপকথার গল্পের ঘটনার মতো। মূলত একটি তারা বা নক্ষত্রের মৃত্যু থেকে জন্ম নেয় কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাক হোল। শুনে অবাক লাগছে? কিন্তু সত্যিই তাই। একটি নক্ষত্রেরও কিন্তু একটি নিদৃষ্ট পরিমাণ জ্বলানি থাকে। আর এই জ্বলানি নিঃশেষ হয়ে গেলে এর মৃত্যু ঘটে। আমরা জানি যে, নক্ষত্রের ভেতরে হাইড্রোজেন গ্যাস বিদ্যমান থাকে। বন্ধুরা, তোমরা জানো কী একটি নক্ষত্র কোন বিক্রিয়ার মাধ্যমে শক্তি উৎপন্ন করে থাকে? হ্যাঁ, অনেকেই হয়তো জানো। একটি নক্ষত্র মূলত নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ার মাধ্যমে তা করে থাকে। আর হাইড্রোজেন গ্যাস না হলে তা সম্ভব নয়। তাছাড়া হাইড্রোজেন শেষ হয়ে গেলে এর কেন্দ্রে থাকা মূল বস্তু সংকুচিত হয়ে যায়। যার ফলে শক্তি উৎপাদন সম্ভব হয় না এবং তারার বা সেই নক্ষত্রের মৃত্যু ঘটে। আর সেই মৃত তারা বা নক্ষত্র থেকেই সৃষ্টি হয় ব্ল্যাক হোলের।
কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাক হোলে একবার প্রবেশ করলে কী বের হওয়া সম্ভব?
আমরা আগেই জেনেছি, কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাক হোলে বিশাল শক্তিশালী মহাকর্ষীয় ক্ষেত্র রয়েছে। তাছাড়া প্রত্যেক ব্ল্যাকহোলের চারদিকে একটি নিদৃষ্ট সীমা বা জায়গা রয়েছে যেখানে একবার প্রবেশ করলে আর বের হওয়া সম্ভব নয় যদি মহান আল্লাহ না চান। এইভাবেই কত যে জানা-অজানা রহস্য নিয়ে মহাবিশ্বের বুকে টিকে আছে কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাক হোল তা স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা জানেন।
কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাক হোলের প্রকারভেদসমূহ
কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাক হোলেরও বেশ কিছু প্রকারভেদ রয়েছে। ভরের উপর ভিত্তি করে এটিকে ৪ ভাগে ভাগ করা হয়।
১) সুপার মেসিভ বা বৃহৎ ব্ল্যাকহোল। ( SUPER MASSIVE BLACKHOLE.)
২) ইন্টারমিডিয়েট ব্ল্যাকহোল বা মাঝারি। ( INTERMEDIATE BLACKHOLE.)
৩) মাইক্রো বা ছোট ব্ল্যাকহোল। ( MICRO BLACKHOLE.)
৪) স্টেলার ব্ল্যাকহোল। (STELLER BLACKHOLE.)
কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাক হোলের আকার কতটুকু?
কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাক হোলের আকার ছোট বা বড় দুইপ্রকারেরই হতে পারে। আমাদের অনেকের মনের প্রশ্ন সবচেয়ে ছোট ব্ল্যাকহোলটি কতটুকু হতে পারে? তোমরা শুনে অবাক হবে যে, বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন যে সবচেয়ে ক্ষদ্রতম ব্ল্যাকহোলের আকার একটি পরমাণুর মতো। তোমরা অনেকেই হয়তো শুনে হাসছো, এত ক্ষুদ্র আর এর ভরই বা কতটুকু হবে? কিন্তু বন্ধুরা তোমরা জেনে অবাক হবে যে সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাক হোলের ভর প্রায় একটা পর্বতের ভরের সমান। আবার এটা শুনেও অবাক হওয়ার বিষয় যে, স্টেলার ব্ল্যাকহোল (STELLER BLACKHOLE.) এর ভরই সূর্যের ভরের ২০ গুণ অপেক্ষা বেশি। তবে তো বাকীগুলো নিশ্চই বুঝতেই পারছো যে কেমন হতে পারে।
ব্ল্যাক হোল কী আমাদের পৃথিবীর জন্য কী হুমকি স্বরূপ?
আলহামদুলিল্লাহ, কেননা আমদের পৃথিবীর জন্য কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাক হোল হুমকিস্বরূপ নয়। কেননা কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাক হোলগুলো মোটেও মহাশূন্যের এতটা কাছে ভ্রমণ করে না বা আসে না যে আমাদের পৃথিবীকে খেয়ে ফেলবে। কোন ব্ল্যাকহোলই আমাদের সৌরজগৎ এর কাছাকাছি নয়। তাছাড়া এটি আমাদের সৌরজৎ এর কাছাকাছি আসার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। যার কারণে বলা চলে আমরা, এই মহাকাশ দানব হতে নিরাপদ।
সূর্য নিজে কী কোন ব্ল্যাক হোলে পরিণত হতে পারে?
না, সূর্যের নিজে কোন সময় কৃষ্ণগহ্বর বা ব্ল্যাক হোলে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। কেননআ ব্ল্যাকহোলে পরিণত হতে যতটুকু ভর ও শক্তি দরকার তা সূর্যের মধ্যে বিদ্যমান নয়।
I, read the full article about Black Hole,have learn a lot of things from this article. The article was quite good. Wish you best of luck for your future. May God bless you.
Thanks dear❤️